for Add
রা’আদ রহমান : ১ এপ্রিল ২০১৬, শুক্রবার, ১৬:৫৬:২৭
রাতটা হতে পারত অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ক্রমেই নিজেকে ভিনগ্রহবাসী প্রমান করা বিরাট কোহলির, হতে পারতো ভারতের দেড়শো কোটি মানুষের। কিন্তু না, এক প্রকার উড়ে এসে জুড়ে বসা লেন্ডল সিমন্স কেড়ে নিলেন সবটুকু আলো। চোটগ্রস্থ আন্দ্রে ফ্লেচারের জায়গায় সুযোগ পেয়ে ভাগ্যদেবীর অশেষ কৃপায় খেললেন ম্যাচ জয়ী এক ইনিংস। তার ব্যাটে ভর করে ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ওয়েস্ট-ইন্ডীজ উঠে গেল ফাইনালে।
অথচ দ্বিতীয় ওভারে যখন ব্যাট করতে নামলেন তিনি, দলীয় ৬ রানে ব্যাটিংদানব ক্রিস গেইলকে হারিয়ে রীতিমত কাঁপছে ওয়েস্ট ইন্ডিস। দলীয় ১৯ রানে স্যামুয়েলসকে হারিয়ে আরো চাপে পড়ে যায় ক্যারিবিয়ানরা, ১৯৩ রানের জয়ের লক্ষ্য তখন এভারেস্টসম মনে হচ্ছিল। সেখান থেকে তরুন জনসন চার্লসকে সাথে নিয়ে সিমন্সের ঘুরে দাঁড়ানো, তৃতীয় উইকেটে জুটিতে ৬১ বলে ৯৭ রানের ঝড়ো পার্টনারশিপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ম্যাচে ফেরালেন তারা। দলীয় ১১৬ রানে চার্লস আউট হয়ে গেলেও সিমন্স ছিলেন অবিচল। আর কাকতালীয়ভাবে ভাগ্যদেবীও তার দিকে মুখ তুলে হাসলেন বারবার। নইলে যে বহু আগেই আউট হতে পারতেন তিনি।
দলীয় ৪৪ রানে ব্যাক্তিগত ১৮ রান করা সিমন্সকে অসাধারণ এক ক্যাচে ফিরিয়ে দিতে পারতেন বুমরাহ, যদি না অশ্বিনের ওই বলটি টিভি রিপ্লেতে নো বল হিসেবে ধরা না পড়তো। একই ভুল আবারো করলেন হার্দিক পান্ডে। ১৫ তম ওভারের শেষ বলটা যেখানে হতে পারতো অশ্বিনের হাতে সিমন্সের ইনিংসের সমাপ্তি, সেটা পান্ডের ওভার স্টেপিংয়ে পরিনত হলো নো বলে। দ্বিতীয়বার লাইফ পেয়ে পরের বলটা সিমন্স হাঁকালেন কাউ কর্নারের বাউন্ডারি দিয়ে সরাসরি গ্যালারীতে। মজার ব্যাপারটা হচ্ছে আগের বলটা পাণ্ডে সিমন্সের কোমরের উপর ফুলটস দিয়েছিলেন, কিন্তু আম্পায়ারদ্বয়ের চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল সেটা। ক্যাচ হওয়ায় দাগের বাইরে ওভারস্টেপটা ধরা না পড়লে এটাও হয়তো আরো অসংখ্য চোখ এড়িয়ে যাওয়া নো-বলের সাথে হারিয়ে যেতো। সৌভাগ্য উইন্ডিজদের! ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সাথে হওয়া হাইট নো-বল রকিসতা তাদের বেলায় হয়নি। বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল বলেই কি না কে জানে!
শেষবার জীবন পেলেন ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তে। লং অনের উপর দিয়ে হাঁকাতে চেয়েছিলেন। ফিল্ডার রবীন্দ্র জাদেজা শেষমেষ ধরেই ফেললেন বলটি। কিন্তু পা বাউন্ডারি লাইন ছুঁয়ে যাওয়ায় শেষমেশ ছয় হিসেবেই ঘোষণা করা হল শটটাকে। এতো চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত সিমন্সকে আউট করা গেল না। যাবে কিভাবে? ভাগ্যদেবী যে ম্যাচের চিত্রনাট্যটা সিমন্সকে কেন্দ্র করেই সাজিয়ে ছিলেন।
আর তাই হয়তো ম্যাচের প্রথম অর্ধে যে কোহলিকে মনে হচ্ছিল রোবটের মতো নিঁখুত, ম্যাচের শেষটা হলো তার তীক্ত অভিজ্ঞতা দিয়ে। লেগ সাইডে দেওয়া তার এক লোপ্পা ফুলটসকে আন্দ্রে রাসেল সপাটে হাঁকালেন গ্যালারীতে। কোহলির সাথে সাথে হতাশায় মুষড়ে পড়লো ভারত, অন্য প্রান্তে নন-স্ট্রাইকে তখন সতীর্থদের কোলে বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে মেতেছেন লেন্ডল সিমন্স। তিনবার আউট হয়েও যিনি ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন, তার উল্লাসটা তো মাত্রা ছাড়াবেই। আর ফানি গেইমের তকমা পাওয়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা যেন আবার প্রমান করে দিল তার গৌরবময় অনিশ্চয়তা। জিতিয়ে দিল, জিতে গেল ক্রিকেট। আর ক্রিকেটের জয়ের রাতের মধ্যমনি হয়ে থাকলেন সিমন্স!
For add
For add
For add
For add
for Add