for Add
নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৭ নভেম্বর ২০২০, শুক্রবার, ৬:০৫:৩৩
ফুটবল কিংবদন্তি ম্যারাডোনা আর নেই। সর্বকালের সেরা ফুটবল তারকাদের অন্যতম এ ফুটবলার ২৫ নভেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সে নিজ বাস ভবনে হৃদ ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।
১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপজয়ী এ মহা তারকার মহাপ্রয়ানে এখন শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে। ম্যারাডোনার মৃত্যুতে থেমে গেল পেলের সঙ্গে বিশ্বসেরার লড়াই। যদিও ফিফা আর দর্শক পছন্দে বিংশ শতাব্দীর সেরা ফুটবলার দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা।
‘হ্যান্ড অব গড’ -ঈশ্বরের হাত দিয়ে ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যারাডোনার গোলের স্মৃতি আজীবন স্মরণীয় থাকবে বিশ্ব ফুটবলে। মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত কোয়ার্টার ফাইনালে অবিষ্মরণীয় ওই গোলটি করেছিলেন ম্যারাডোনা। যে কারণে ফুটবল ‘ঈশ্বর হিসেবে’ পরিচিতি লাভ করেন এ কিংবদন্তি।
কোকেন ও এ্যালকোহলে অতিরিক্তি আশক্ত হবার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে গিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী পেলেও হতবাক হয়েছেন এ ফুটবল ঈশ্বরের মৃত্যুতে। ‘ডিয়ার ফ্রেন্ড’ সম্বোধন করে ম্যারাডোনার প্রতি শোক বার্তায় ৮০ বছর বয়সী ব্রাজিলীয় কিংবদন্তি বলেছেন, ‘একদিন আকাশে আমরা এক সঙ্গে খেলব।’
১৯৮৬ সালে এই ম্যারাডোনার কারণে আর্জেন্টিনার কাছে পরাজয় মেনে নেয়া ইংল্যান্ড দলের ফুটবলার গ্যারি লিনেকার বলেন, ‘ম্যারাডোনা সর্বকালের সেরা তারকা।’ তবে বিখ্যাত সেই গোলের উদ্বৃতি দিয়ে তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘আশীর্বাদ পাবার পরও সমস্যাময় জীবন কাটানো ম্যারাডোনা শেষ পর্যন্ত হয়তো ঈশ্বরের কাছেই কিছুটা সান্তনা লাভ করবেন।’
আধুনিক ফুটবলের এই জনপ্রিয় তারকার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লিওনেল মেসি বলেন,‘তিনি আমাদের ছেড়ে গেছেন, তবে একেবারেই ছেড়ে যেতে পারবেন না। কারণ দিয়াগো চিরন্তন।’ ম্যারোডোনার মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতি আলবার্তো ফার্নান্দেজ।
মুত্যসংবাদ পেয়ে ম্যারাডোনার ভক্তরা জড়ো হন বুয়েন্স আয়ার্সের বোকা জুনিয়র্স স্টেডিয়ামে। যেখানে ১৯৮১ থেকে ৮২ সাল এবং ১৯৯৫ থেকে ৯৭ সাল পর্যন্ত খেলোয়াড়ী জীবন কাটিয়েছেন ম্যারাডোনা।
আর্জেন্টিনার হয়ে ৯১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ৩৪টি গোল করেছেন ম্যারাডোনা। চারটি বিশ্বকাপ খেলা এ ফুটবলার দেশটিকে একক নৈপুণ্যে বিশ্বসেরার ট্রফি জিতিয়েছেন। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে তার অবদান শুধু আর্জেন্টিনাতেই নয়, বিশ্ব ফুটবলে রাজার আসনে আসীন করেছে তাকে।
ম্যারাডোনার জন্ম ১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর বুয়েনস আয়ার্সের লানুস শহরের একটি গরীব পরিবারে। বাবা-মায়ের তিনটি কন্যা সন্তানের পর তিনিই ছিলেন ছেলে। তার ছোট দুই ভাইও ছিলেন পেশাদার ফুটবলা।
মাত্র আট বছর বয়সে ম্যারাডোনা নজরে আসেন স্কাউটদের। ১৬ বছর পূর্ণ হবার ১০দিন আগে অভিষেক ঘটে আর্জেন্টিনার পেশাদার ফুটবলে।
আর্জেন্টিনা জুনিয়র্সের হয়ে ৫ বছরে ১১৫ গোল করা ম্যরাডোনাকে লুফে নিতে চেয়েছিল দেশসেরা ক্লাবগুলো। কিন্তু তিনি বেঁছে নেন নিজ শহরের ক্লাব বোকা জুনিয়র্সকে। ৪ মিলিয়ন ডলারে পাড়ি জমান ওই ক্লাবে। ওই মৌসুমেই প্রথম শিরোপার স্বাদ নেন তিনি ।
এরপরই ৮২ বিশ্বকাপে অংশ নেন ম্যারাডোনা। স্পেন গিয়ে খুব বেশি ঝলক দেখাতে না পারলেও দেশটির প্রেমে পড়ে যান ম্যারাডোনা। উড়াল দেন বার্সেলোনায়। সেখানে গিয়ে জয় করেন কোপা দেল রে, রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে জয় করেন এল ক্ল্যাসিকো।
বার্সেলোনার পর আরো একবার রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে পাড়ি জমান নাপোলিতে। ৮৭ সালে তার বদৌলতে প্রথমবার সিরিএ শিরোপা জয় করে নাপোলি। এরপর সেভিয়া, নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজ হয়ে বোকাতেই ৯৭-সালে থেমেছে ম্যারাডোনার ক্যারিয়ার।
ম্যারাডোনার সবচেয়ে বড় অধ্যায়ের শুরু হয় ২০০৮-সালে আর্জেন্টিনার কোচের দায়িত্ব নিয়ে। কিন্তু সেখানেও সমালোচনার জন্ম দেন তিনি। ২০১০ বিশ্বকাপে ব্যর্থ হয়ে ইতি টানেন কোচ হিসেবে আলবিসেলেস্তে অধ্যায়ের। এরপর একই কাজ নিয়ে আরব আমিরাত, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু থিতু হতে পারেননি। নিজ শহরের ক্লাব জিমনেসিয়ার দায়িত্বে পালনরত অবস্থায় এই পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিলেন এই ফুটবল ঈশ্বর। বাসস।
For add
For add
For add
For add
for Add